বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট, ২০১৪

21 শে চেতনার সংগীত

21 শে চেতনার সংগীত

গীতীকার: কবি হুমায়ুন মজুমদার

একুশ আমার গর্ব......
একুশ আমার রক্ত..(2)
তাতে..বয়ে গেছে.. লাখো শহীদের রক্ত
এতে আরো হারিয়েছে (লক্ষ পাঁচেক) নারী সতিত্য
তাদের আমি জানাই সালাম
সালাম...সালাম....হাজার সালাম.......
তাদের মাঝে মনে পরে...রফিক বরকত জব্বার সালাম
তাদের আমি জানাই সালাম -সালাম সালাম
তারা তো হয়ে থাকবে মোদের এই মনি কোঠায় চির অম্লান

সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৪

Unexplained 13 Picture

Unexplained 13 Picture

আজ আপনাদের সামনে এমন ১৩টি ছবি তুলে ধরব যার রহস্যের কোন সমাধান আজ পর্যন্ত পাওয়া সম্ভব হয় নাই। তাহলে চলুন এবার রহস্যে ঘেরা এই ১৩ট ছবি দেখে নেওয়া যাক,

 ঝুলন্ত দেহঃ
কুপার ফ্যামিলি টেক্সাসে তাদের সদ্য কেনা নতুন বাড়িতে উঠেছে। সব কিছু গুছানো শেষ হলে নতুন বাড়িতে ওঠাকে ফ্রেমে আবদ্ধ করে রাখতে পরিবারের সকলে এক হয়ে ছবি তোলে। কিন্তু ছবি ডেভেলপ হয়ে আসার পরে দেখা যায় তাদের ডান দিকে একটা মানুষের ঝুলন্ত দেহ বা লাশ। কিন্তু ছবি তোলার সময়তো সেখানে তেমন কিছু ছিল না, তাহলে এই ঝুলন্ত দেহ আসল কোথা থেকে? ক্যামেরার ভুল নাকি কোন প্রেতাত্মা?

বাড়তি হাতঃ
গ্রীস্মের ছুটি চলছে, স্কুল বন্ধো, খেলার মাঝেই চার বন্ধুর এক সাথে তোলা ছবি। কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে ছবির ডান দিকে যে ছেলেটি রয়েছে তার মাথার কাছে বৃদ্ধা আংগুল উঁচু করে যে হাতটি রয়েছে সেটি এই চার বন্ধুদের মধ্যে কারো হাত না। খেয়াল করে দেখুন ছবিতে মোট হাতের সংখ্যা ৯টি, তাহলে এই বাড়তি হাত কার? আর ছবিটি তুলেছিল এই চার বন্ধুর মধ্যেকার কোন এক জনের পিতা, তাই বলাই যাই এটা বাচ্চাকালের কোন দুষ্টুমি না বরং বাড়তি একটি হাত!!
ভবিষ্যতের মানুষঃ
উপরের যে ছবিটি দেখতে পাচ্ছেন, এই ছবিটি তোলা হয়েছিল ১৯৪১ সালে, ক্যানাডার South Forks Bridge এর পুনঃরায় চালু করার অনুষ্ঠানে। ছবিটির ডান পাশে লাল গোল চিহ্ন দেওয়া লোকটিকে দেখুন খেয়াল করে, ১৯৪১ সালে কারো পোষাক এরকম হত না আর তার হাতে যে ক্যামেরা রয়েছে সেটি তৎকালীন ক্যামেরার তুলনায় অনেক বেশি আধুনিক। এবার ছবিটির বাম দিকে লাল গোল চিহ্নের দিকে দেখুন এটা ১৯৪১ সালের সর্বাধুনিক ক্যামেরা। তাহলে এই ব্যাক্তিটি কে? মানুষকি তাহলে Time Machine বানিয়ে ফেলেছে? এর কোন উত্তর আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
অসংগায়িত হিন্টারকায়েফেকের (Hinterkaifeck) খুনঃ
ঘটনাটি ঘটে জার্মানিতে ১৯২২ সালে, হিন্টারকায়েফেকের একটি ফার্মে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয় ৬ জনকে। সারা দেশে এ নিয়ে আলোচনার ঝড় চললেও কেউ গ্রেফতার হয় নাই। প্রায় ১০০ জনের বেশি লোককে জেরা করা হয়েছে, কিন্তু কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয় নাই, এমন কি এই হত্যার কোন উদ্দেশ্য পর্যন্ত খুজে পাওয়া যায় নাই। এই বাড়ির কাজের লোক ৬ মাস আগে বাড়ি ছেড়ে চলে যায় এই বলে যে বাড়িতে প্রেতাত্মারা আছে। তবে একটা যুক্তি দ্বার করিয়েছিল তৎকালীন তদন্তকারি দল। তাদের মতে, হত্যাকারী অনেক দিন আগের থেকেই বাড়িতে ছিল, সময় বুঝে খুন করেছে। সব থেকে অবাক করার বিষয় হচ্ছে খুনি খুন করার পর গোয়ালের গরু গুলিকে খাবার দিয়ে গেছে আর রান্নাঘরে খাবার রান্না করে থুয়ে গেছে। কে করেছে এই খুন? আর কেনই বা এই খুন? এটা আজ পর্যন্ত জানা যায় নাই। উপরে যে ছবি দেখছেন সেখানে একজনকে খুন করে খড় দিয়ে শুধু দেহর উপরিভাগ ঢেকে রাখা হয়েছে।
ফনেক্সের আলোঃ
মার্চ ১৩, ১৯৯৭ সালে আমেরিকার এরিজোনা, নেভাডা এবং পরের দিন মেক্সিকোন সনোরা শহরে সারি বদ্ধ ভাবে আলোর এই গোলক গুলি দেখা যায়। হাজার হাজার মানুষ এর সাক্ষী। এগুলি কি বিমান বাহিনীর কোন প্লেন নাকি UFO তার কোন সঠিক জবাব আজ পর্যন্ত কেউ জানে না।
মহাকাশচারীঃ 
বসন্তের এক বিকালে জিম টেম্পলটন খোলা আকাশের নিচে বাচ্চাদের খেলার মাঠে তার ছোট মেয়ের একটা ছবি তোলে। ছবিটি ডেভেলপারের কাছ থেকে আসার পরে দেখা যায়, তার মেয়ের মাথার ঠিক পিছনেই মহাকাশচারীদের পোশাক পরিহিত কেউ, কিন্তু ছবি তোলার সময় সেখানে এমন কেউ ছিল যে এই পোশাক পরা ছিল। এমনকি Kodak এই ছবির নেগেটিভ নিয়ে পরীক্ষা করে বলে যে ছবি ১০০% আসল কোন এডিটিং হয়নি। তাহলে কে এই মহাকাশচারী শুধু মূহুর্তের জন্য ছিল মাত্র?!
Battle of LA:
এই ছবিটি প্রথম প্রকাশ করা হয় ১৯৪২ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি Los Angeles Times দৈনিক পত্রিকায়, আর একই সাথে পত্রিকাটি দাবি করে যে UFO এসেছিল তাদের শহরে আর তৎকালীন সেনাবাহিনীর লোকেরা সেটি লাইট দিয়ে দেখছে, এমনই এক মূহুর্তের ছবি এটি। কিন্তু কেউ এটি বিশ্বাস করে কেউ করে না, আসল সত্য কেউ জানে না। তবে ১৯৪২ সালে এরকম ছবি চাইলেই বানানো সম্ভব না।
হেসেল্ডেনের আলোঃ
নরওয়ের হেসেল্ডেন শহরে সে ১৯৪০ সাল থেকে এরকম আলো দেখা যায়। উপরের ছবিটি ১৯৮১ সালে তোলা, ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত এরকম আলো প্রতি সপ্তাহে ১৫ থেকে ২০ বার দেখা যেত। এর ফলে অনেক টুরিষ্ট জমায়েত হয়ে থাকে এখানে। অনেকেই রাতভর থাকে এই আলো দেখার জন্য। কিন্তু এই আলো কিভাবে তৈরি হয় আর কেন তৈরি হয় তার কোন ব্যাখ্যা আজ পর্যন্ত কেউ দেয়নি। তবে বেশি লোক সমাগম হতে থাকায় বর্তমানে বছরে ১০ থেকে ২০ বার দেখা যায় মাত্র। এই আলো অনেক উজ্জ্বল এবং সাদা আর হলুদ বর্নের হয়। কেন তৈরি হয় এই আলো? আর কি তৈরি করে তা এখন পর্যন্ত ব্যাখ্যার বাইরে।
ব্লাক নাইট স্যাটেলাইটঃ
মহাকাশ আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত বিশাল এক রহস্যের ভান্ডার, কিন্তু এই ব্লাকনাইট স্যাটেলাইট আরো বড় রহস্য। এটি সম্পূর্ন কালো এক বস্তু দিয়ে তৈরি, যা থেকে প্রতিনিয়ত পৃথিবীতে সিগনাল আসছে, যা আবার NASA কতৃক পরীক্ষিত এবং স্বীকৃত। ধারনা করা হয় এই স্যাটেলাইট যা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে তার বয়স প্রায় ১৩০০০ বছর, আর মানুষ মহাকাশে যাওয়ার টেকনোলজি অর্জন করেছে সবে মাত্র ৬০ বছরের মত। তাহলে কে এই স্যাটেলাইট উতক্ষেপন করল? আর এর সিংগনাল কিসের পাচ্ছে? আর কেন পাঠাচ্ছে? অনেক ক্ষেত্রে এর অস্থিত্য কেউ স্বীকার করে না। আবার অনেকের ধারনা বহু আলোক বর্ষ দূর থেকে কোন এক এলিয়েন গ্রহ থেকে এসেছে এই স্যাটেলাই। যার বর্তমান অবস্থান ঠিক আমাদের পৃথিবীর বাইরে। এর আসল রহস্য এখন পর্যন্ত কেউ জানে না।

৯/১১ আক্রমনের দক্ষিন টাওয়ারের মহিলাঃ
৯/১১ টুইন টাওয়ারে বিমান হামলার কথা মনে আছে নিশ্চই, এখানে আপনারা যে ছবি দেখছেন সেটি দক্ষিন দিকের টাওয়ারের ছিদ্র যেখানে বিমান সরাসরি আঘাত করেছিল। এবার ছবির ডান দিকে একটু খেয়াল করে দেখুন এক জন মহিলা সেখানে দাঁড়িয়ে হাত নাড়াচ্ছে! এনার নাম Edna Clinton, অবাক করার বিষয় হচ্ছে সরাসরি বিমান হামলা, বিস্ফোরন আর আগুনের পরে সে কিভাবে বেঁচে ছিল? এই প্রশ্নের উত্তর কারো কোন দিন জানা হবে না, কেননা তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি, কেননা সম্পূর্ন বিল্ডিং ধ্বসে পরেছিল।
বিগ ফুটঃ
ছবিটি ২০০০ সালে নামহীন একজন মহিলা ফ্লোরিডার পুলিশ ডিপার্টমেন্টের কাছে এই ছবিটি পাঠান এবং একটা চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন যে, কয়েক সপ্তাহ ধরে  একটা বানরের মত প্রানী তার বাড়ির পিছনের আপেল গাছ থেকে রাতের বেলা আপেল ছিড়ে নিয়ে যায় আর এই ছবিটি সেই প্রানীর। এই ছবিটি প্রকাশ পাবার পরে ফ্লোরিডায় বিগ ফুটের অবস্থান নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হলেও এই প্রানীর দেখা আজ পর্যন্ত কেউ পায়নি।
The Madonna with Saint Giovannino and a UFO:
এই ছবির নাম দেওয়া হয় "The Madonna with Saint Giovannino", ১৫ শতকের দিকে চিত্রকর Domenico Ghirlandaio (১৪৪৯-১৪৯৪) আঁকেন। এই ছবিটি এখন পর্যন্ত ইতালির ফ্লোরেন্স শহরের টাউন হলে ঝুলানো আছে। ছবি খেয়াল করলে দেখবেন, ছবিটে আঁকা ঈসা (আঃ) এর মা মরিয়ম (আঃ) বা কাঁধের উপরে বাইরে একটি উড়ন্ত চর্কি যার নিচ থেকে আগুন জ্বলছে আর মাটিতে ধারানো এক লোক আর তার কুকুর দৃশ্যটি দেখছে। এই ছবির মানে কি তা আজ পর্যন্ত কেউ ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।
ফ্যালকন লেকের ঘটনাঃ
১৯৬৭ সালের ২০শে মে, Stefan Michalak ছুটির দিন কাটাতে যান Whiteshell Provincial Park এ, এখানে থাকাকালিন সময়ে একদিন তিনি দেখতে পান আকাশ থেকে সিগারেটের আকৃতির দু'টি যান নেমে আসে, আর তা অবতরন করে তার কাছেই, আর দরজা খুলে যায়। এর পর তিনি ইংরেজি ভাষায় ঐ যানের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে কথা বলার চেষ্টা করেন কিন্তু কোন সাড়া পাননি। এর পরে তার চারপাশ ঘিরে ফেলে রঙ্গিন এক কুয়াশা যার ঝাঝালো ভাব তার কাপড় পুড়িয়ে ফেলে আর তার হাত পুরে যায় তাতে। এরপরে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরবর্তিতে তার তিনি উলঙ্গ অবস্থায় নিজেকে আবিস্কার করেন। তার দেহে বিভিন্ন আকৃতির কালো কালো দাগ দেখতে পান। উপরের ছবিতে তার পেটের কালো দাগ গুলি দেখা যাচ্ছে। তাহলে কি তিনি এলিয়েন দ্বারা পরিক্ষিত হয়েছেন নাকি অন্য কিছু?! এর কোন সঠিক উত্তর আজো কারো জানা নেই।
❝লেখাটি ভাল লাগলে আপনার বন্ধুর সাথে শেয়ার করুন❞

শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৪

ফটোশপ এর্ং আমি

যে সকল মহান ব্যক্তিদের কারনে আমরা পেয়েছি আজকের এই ফটোশপ এবং 

ফটোশপ এর ইতিহাস সহ পেছনের কিছু গল্প

আসসালামু আলাইকুম,
বিজয়ের মাসে বিজয়ী ভাব ভাব অবস্থায় ভালো আছেন সবাই আশা করি। আমাদের জাতীয় জীবনে যে কয়টি মাস ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ন স্বাক্ষী হয়ে আছে তার মধ্যে ডিসেম্বর অন্যতম। স্পষ্ট করে বললে ডিসেম্বর মাস আমাদের বিজয়ের মাস। আর সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের টিউন লেখা শুরু করলাম।
গ্রাফিক ডিজাইনারগন মুলত তিনটি প্রোগ্রামেই তাদের ডিজাইন কাজটি করে থাকেন। তার মধ্যে এডবি ফটোশপ হলো ইমেজ এডিটিং এর জন্য পৃথিবীর সেরা প্রোগ্রাম। অন্যদিকে এডবি ইলাষ্ট্রেটর ভেক্টর ভিত্তিক ডিজাইনের জন্য, এডবি ইনডিজাইন প্রিন্টিং ও প্রেসের প্রজেক্টগুলোর কাজে খুব বেশি পরিমানে ব্যবহৃত হয়।
আজ শুধুই এডবি ফটোশপের আলোচনা। ফটোশপকে আমরা সবাই অনেক ভালোবাসি কারন পেশাদার ডিজাইনার থেকে শুরু করে ফটোগ্রাফার এমনকি শখের বসে যারা ফটো এডিটিং করেন তারাও ফটোশপ দিয়েই তাদের কাজ করেন। ফটোশপের ব্যবহার অনেক সহজ, টুলস গুলো সুন্দরভাবে সাজানো এমনকি একটি ডিজাইনকে চমকপ্রদ করে তুলতে যা যা করা লাগে প্রায় সবকিছুই ফটোশপে রয়েছে। তাই ফটোশপ ডিজাইনার, ফটোগ্রাফারদের কাছে এত জনপ্রিয়।
কিন্তু বলতে কিছুটা খারাপ লাগলেও এটাই সত্য যে আমরা অনেকেই ফটোশপের উৎপত্তি থেকে শুরু করে আজকের অবস্থানে আসার ইতিহাস, কোন কোন মহান ব্যাক্তিদের পরিশ্রমের ফসল হিসেবে ফটোশপ পেয়েছি তা জানিনা। আর এই অজানা বিষয়কে জানার জন্য আজকের লেখা। আলোচনার বিষয়টিকে আমরা ঘুরিয়ে এভাবেও বলতে পারি
“যে সকল মহান ব্যক্তিদের কারনে ফটোশপ পেয়েছি আমরা তাদের সম্মন্ধে বিস্তারিত জানব আমরা আজই”

কারা সেই মহান ব্যক্তি আসুন জেনে নেইঃ


Thomas knoll পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। জন্ম আমেরিকার Michigan, গ্রেজুয়েশান শেষ করেন University of Michigan  থেকে। তার ভাই Jhon knoll যিনি পেশায় Visual effects supervisor. তাদের বাবা Glen knoll ছিলেন University of Michigan  এর একজন প্রফেসর।
সময়টা ১৯৮৭ সাল। তখন Thomas knoll একজন Phd student.  তিনি Macintosh Plus  এর জন্য একটি গ্রাফিক এপ্লিকেশন ডেভলপ করেন। এই এপ্লিকেশনটি এক কালারের পর্দায় সাদা-কালো ছবি শো করতে ব্যবহার হত। Knoll  এটির নাম দিয়েছিলেন Display. মূলত এই display এপ্লিকেশনটিকে Father of photoshop বলা যায়্।
Thomas knoll এর ভাই Jhon knoll প্রোগ্রামটি দেখলেন। Jhon knoll ফটোর প্রতি অতিমাত্রায় আগ্রহী ছিলেন। Jhon  তার ভাই Tom কে একটি ফটো এডিটিং প্রোগ্রাম বানানোর জন্য রাজি করালেন। তখন Thomas knoll তার চলমান শিক্ষা জীবন থেকে ৬ মাসের বিরতি নিয়ে তৈরি করেন ফটো এডিটিং প্রোগ্রাম যেটির নাম দিতে চেয়েছিলেন Image pro. কিন্তু কপিরাইট সংক্রান্ত জটিলতার কারনে সে নামের বদলে আমরা পেয়ে যাই ফটোশপের প্রথম ভার্সনফটোশপ ০.৭। দুই ভাইকে একটু দেখে নেই-
Thomas Knoll
Thomas Knoll
Jhon Knoll

ফটোশপের শুরু দিকের ভার্সনগুলোঃ

ফটোশপ ১.০ >>

সেপ্টেম্বর ১৯৮৯ এডবি কর্পরেশন ফটোশপ প্রোগ্রামটি কিনে নেওয়ার পর এর ফিচার এ ব্যাপক পরিবর্তন আসে। ১ ফেব্রুয়ারী ১৯৯০ ডিজিটাল কালার এডিটিং ও ইমেজ রিটাচিং সহ ফটোশপ ১.০ ভার্সন রিলিজ হয়। SciTex এর মত উচ্চমানের ফ্ল্যাটফরমে ব্যবহারের জন্য এটি চালু হয় এবং সাধারন মানের একটি Photo retouching এর জন্য ৩০০ ডলার ব্যয় করতে হত তখন।

ফটোশপ ২.০ >>

জুন ১, ১৯৯০ আর নতুন ফিচার যুক্ত করে ফটোশপ ভার্সন ২.০ রিলিজ করে। এই ভার্সনে যুক্ত করা হয় adding Paths, CMYK color and the Pen tool এর মত গুরুত্বপূর্ন ফিচারগুলো।
১৯৯০ সালের নভেম্বর মাসে সর্বপ্রথম উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে চালানোর উপযোগী করে ফটোশপ ২.৫ রিলিজ করা হয়। এই ভার্সনেই ফটোশপে প্যালেট যুক্ত করা হয়।
১৯৯৪ সালে ফটোশপ ৩.০ রিলিজ হয়। এই ভার্সনে ফটোশপের লেয়ার প্যানেল যুক্ত করা হয়। এই লেয়ার যুক্ত হওয়ার ফলে ডিজাইনারদের কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়। অনেক জটিল বিষয় সহজ হয়ে যায়। আসলে সবই সম্ভব হয়েছে Thomas Knoll এর জন্য।

ফটোশপ ৪.০ >>

প্রায় দুই বছর পর ফটোশপের পরবর্তী ভার্সন ফটোশপ ৪.০ রিলিজ হয়। এই ভার্সনে যুক্ত করা হয় Adjustment layer ও  macro ফিচারদুটি। এছাড়াও ফটোশপের user interface  যুক্ত করা হয় এই ভার্সনে। একটু ভেবে দেখুন ডেভেলপারদের অক্লান্ত পরিশ্রম না থাকলে এ্কটি ইমেজে ওয়াটারমার্ক দিতে আমাদেরকে কতইনা কষ্ট করতে হত আজও।

ফটোশপ ৫.০ >>

১ মে ১৯৯৮ ফটোশপের ভার্সন ৫.০ রিলিজ করা হয়। Editing type, Undo command, History panel, Magnetic lasso tool প্রভৃতি ফিচার চালু করা হয় এই ভার্সনে। ইমেজ এডিটিং এ কিছু বিষয় কত সহজ হয়ে গিয়েছে এই ভার্সনটি রিলিজ হওয়ার পর। এরপর মাত্র ১ বছর পর ফটোশপ ৫.৫ রিলিজ করা হয়। এই ভার্সনে Save for web  ফিচারটি যুক্ত করা হয়। আর এর সাথে সাথে PNG ফরমেট এ ইমেজ এক্সপোর্ট করার ব্যবস্থাও পেয়ে যায়।

ফটোশপ ৬.০ >>

বিংশ শতাব্দীর একেবারে শেষপ্রান্তে ফটোশপ ৬.০ রিলিজ হয়। ভেক্টর শেপ, টাইপ টুল, ব্লেনডিং অপশান প্রভৃতি ফিচার যুক্ত করা হয় এই ভার্সনে। এই ভার্সনে টাইপ টুল হয়েছে আরও সহজ। চোখ ধাধাঁনো এফেক্ট দেওয়ার জন্য ব্লেনডিং মোড এই ভার্সনেই পরিপূর্নতা পায়।

ফটোশপ ৭.০ >>

ফটোশপ ৬.০ রিলিজ হওয়ার ঠিক ২ বছর পর এ যাবত কালের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত ভার্সন ফটোশপ ৭.০ রিলিজ হয়। খুব সহজে ফাইল ও ফোল্ডার ব্রাউজ করার জন্য ফাইল ব্রাউজার, ব্রাশ ও প্যাচ টুল যুক্ত হয় এই ভার্সনেই। ফটোশপের পূর্ন রুপ বলতে আমরা এই ভার্সনকেই বুঝি। আজও অনেক বড় বড় বিখ্যাত ডিজাইনগন ফটোশপ ৭.০ তে কাজ করেন।

ফটোশপ ‍ক্রিয়েটিভ স্টুডিও (সিএস ৮.০) >>

যেহেতু ফটোশপের ডেভলপমেন্ট একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে চলছে। ডেভেলপারগন অক্লান্ত পরিশ্রম করছে নিত্যনতুন ফিচার যোগ করার কাজে। ২০০৩ সালে ডিজাইনারদের প্রয়োজনীয় সবকিছু, গ্রাফিক ডিজাইনে লে-আউট ফিচার, ফটোগ্রাফির সবকিছু যুক্ত করে ফটোশপ রিলিজ করে ফটোশপ ৮.০ (সিএস)। Script, language, grouping of layer  প্রভৃতি ফিচার যুক্ত করা হয় এতে। যা কিনা এই প্রোগ্রামটির অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যায়।

ফটোশপ সিএস ২ >>

২০০৫ সালে ফটোশপ সিএস ২ ভার্সন রিলিজ হয়। Red-eye removal tool, Vanishing point tool, Smart object এর মত ফিচার নিয়ে আসে এই ভার্সনে যার সাহায্যে ফটোশপের এডিটিং হয়ে উঠে কোন ধরনের Quality লস করা ছাড়াই। সত্যিই ধন্যবাদ দিতে হয় ডেভেলপার টিমের প্রত্যেকটি সদস্যকে।

ফটোশপ সিএস ৩.০ >>

২০০৭ সালে ফটোশপ সিএস ৩.০ রিলিজ হওয়ার পর এই সফটাও্য়্যারে আমরা বৈপ্লবিক পরিবর্ফতন দেখতে পাই। টূলস এ ব্যাপক পরিবর্তন আসে। এর নেভিগেশান প্রক্রিয়া ফটোশপে কাজ করাকে আর দ্রুততর করে তোলে। ক্যামেরা র ও কুইক সিলেকশান টুলের মত চমতকার বিষয়গুলো যুক্ত হয় এই ভার্সনে।

ফটোশপ সিএস ৪ >>

২০০৮ সালে ফটোশপের নতুন ভার্সন সিএস ৪ আসে। Panning, Zooming, Masking, Adjustment panel ফিচারগুলোকে আধুনিক করে ডিজাইনার কাজকে আরও দ্রুতগতির ও আর চমকপ্রদ করার বিভিন্ন কমান্ড আসে এই ভার্সনে।

ফটোশপ সিএস ৫ >>

২০১০ সালে ফটোশপ সিএস ৫ রিলিজ হয়। এই ভার্সনে যুক্ত হয় Puppet Warp Tool, Bristle tips, Mixer Brush and Automatic Lens correction প্রভৃতি ফিচারগুলো। Masking ফিচারটিকে আরও আধুনিক করা হয় এই ভার্সনে।

ফটোশপ সিএস ৬ >>

মে ৭, ২০১২ বহুল প্রতিক্ষিত ফটোশপ সিএস ৬ রিলিজ হয়। এই ভার্সনে সম্পূর্ন নতুন একটি ইউজার ইন্টারফেস আমরা পেলাম। যাতে নিজেদের সুবিধা মত কালার এডজাস্ট করা সম্ভব। Auto saving, patch tool, move tool, blur gallery,vector shape with dash and dotted stroke প্রভৃতি নতুনভাবে সংযোজন করা হয়েছে। অর্থাৎ ফটোশপকে পরিপূর্ন করার যা প্রয়োজন সবই করা হয়েছে এই ভার্সনে। ভিডিও, এনিমেশন তৈরি করা অনেক সহজ হয়েছে এই ভার্সন আসার পর।

ফটোশপ Creative Cloud (সিসি) >>

ফটোশপ সিএস ৬ এর মজা পুরোপুরি নিতে পারলামনা। ঝড়ের বেগে রিলিজ হয়ে গেল ফটোশপের একেবারে লেটেস্ট ভার্সন Photoshop creative cloud (CC). এটি মূলত আসে সফটওয়্যার পাইরেসি কমানোর লক্ষ্যে যাতে করে এডবি কোম্পানি তাদের খরছটা কমাতে পারে। যে কারনে তারা ব্যবহারকারীদের জন্য কিছু অর্থ এর বিনিময়ে এটি এডবি থেকে ব্যবহার করার সুযোগ/সেবাটি রেখেছে।
Smart sharpen ও Camera sharp reduction এর মত অবিস্বাশ্য কিছু ফিচার যোগ করা হয়েছে এই ভার্সনে।
উপরের আলোচনা থেকে আমরা যদি একটু পিছন ফিরে তাকাই তাহলে দেখব Thomas Knoll ও Jhon Knoll ভাইদ্বয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় Display দিয়ে যা শুরু হয়েছিল তার আধুনিক সংস্করন হলো বর্তমান ফটোশপ সিসি। বর্তমান ভার্সনটি দিয়েই গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইনের প্রয়োজনীয় কাজ, ভিডিও এডিটিং, সীমিত এনিমেশন প্রভৃতি খুব সহজেই করা সম্ভব। এডবি কোম্পানির ডেভেলপার গন যে ভ্রত নিয়ে  সামনে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে আমরা ভবিষ্যতে ফটোশপকে অন্য ভুমিকায় আর অত্যাধুনিক চেহারায় দেখলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা। আমরা সবাই সে অপেক্ষায় থাকি এবং বর্তমান পর্যায়ে যতটুকু পেয়েছি তার সুধা পান করি।
“আমরা সবাই ফটোশপ ভালোবাসি”

শেষ কথাঃ

এই প্রোগ্রামটির বহুমুখি ব্যবহার ডিজাইনারদের জন্য অাশির্বাদ। এই লেখাটি একটি তথ্যমূলক লেখা। যতগুলো তথ্য তুলে ধরা হয়েছে সবই সঠিক ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে চেষ্টা করব আবার এরকম তথ্যসমৃদ্ধ লেখা নিয়ে হাজির হবার জন্য। সবাই ভালো থাকবেন আশা করি। কোন প্রশ্ন থাকলে মতামত অংশে জানাবেন। নিজের কাছে ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যকে জানানোর দায়িত্ব নিবেন আশা করি। কারন জ্ঞান বিতরনে জ্ঞানভান্ডার সমৃদ্ধ হয় সবসময় এটা চরম সত্য।
আজ আর নয়। আবার আসব। আর সরাসরি আমাকে পেতে নিচের ইমেজ লিংকে ক্লিক করে ফেসবুকে আসুন। ধন্যবাদ সবাইকে।